বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১৮টি বিদ্যালয়ের জন্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেঞ্চ তৈরিতে অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জাইকার ফান্ডে তৈরি এসব বেঞ্চ কয়েকটি স্কুল গ্রহন করেনি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার পাতারহাট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে লাঞ্ছিত করারও অভিযাগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী ও শিক্ষা কর্মকতার উপরে। তবে বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলানির্বাহী কর্মকর্তা। জানা গেছে, ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা (জাপান আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা) এর ফান্ডেও ইউজিডিপি প্রকল্পের আওতায় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেঞ্চ তৈরির জন্য নোটিশ বোর্ডে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। সেখানে মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এরা হচ্ছে ব্যাঙ্গলপলিমার, হে মিল্টন মেটাল ও তাসফিয়া। এর মধ্যে ব্যাঙ্গল এই কাজটি পায়। তারা ৪০ লাখ ৪৫হাজার টাকায় ৩৪১ সেট বেঞ্চ তৈরি করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশলী ও শিক্ষা অফিসারের যোগ সাজসে গোপণে এই টেন্ডারটি আহ্বান করা হয়। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাত্র ৩ টি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে এই কাজটি বাগিয়ে নেয়া হয়। পাশাপাশি বেঞ্চ তৈরির মান ছিল নিম্নমানের। আর প্রতি বেঞ্চের জন্য বরাদ্ধ রাখা হয় ১২ হাজার টাকা। যা একটি বেঞ্চ তৈরিতে মাত্র ৪ হাজার টাকার প্রয়োজন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার এই বেঞ্চ তৈরি করে স্কুলে স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পাতারহাট গালস স্কুলের প্রধান শিক্ষক এই বেঞ্চ গ্রহন করেনি। এ ঘটনায় উপজেলা প্রকৌশলী ও শিক্ষা কর্মকর্তা পাতারহাট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজ কুমার নাথকে লাঞ্চিত করে। নাম প্রকাশ নাকরা শর্তে সেখানকার দুই জন ঠিকাদার জানান, স্থানীয় এমপি, উপজেলা প্রকৌশলী ও শিক্ষাকর্মকর্তা এই চক্রের সাথে জরিত। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও জানেন না। তারা সুকৌশলে টেন্ডার করে কাজ বাঘিয়ে নিয়েছে। পাতারহাট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ কুমার নাথ বলেন, জাইকার ফান্ডে মেহেন্দিগঞ্চের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোরমধ্যে বেঞ্চ দেয়ার কথা। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হিসেব অনুযায়ী প্রতিটি বেঞ্চের দৈঘ্য হবে ৬ ফুট। কিন্তু আমাদের জন্য যে বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, তার দৈঘ্য সাড়ে ৪ ফুট। আমার স্কুলে ৩৫সেট বেঞ্চ দেয়া হয়েছিল। তা ফেরত দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে একটু কথাকাটাকাটি হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বলেন, এই বেঞ্চগুলো টেন্ডারের মাধ্যমেই করা হয়েছে। এই কাজটি ছিল প্রায় ৪০ লাখ টাকার। সিডিউল অনুযায়ী এক একটি বেঞ্চ তৈরিতে ব্যয় ১০ হাজার টাকার থেকে একটু বেশি। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাতারহাট বালিকা বিদ্যালয় বেঞ্চ ফিরিয়ে দিয়েছে কারণ তারা ইন্টারেষ্ট ছিল না। তা ছাড়া তাদের লাগবে না তাই নেয়নি। অন্যরাতো নিয়েছে। আর প্রধান শিক্ষকের সাথে আমাদের ভাল সর্ম্পক তার সাথে যা হয়েছে সেটা একেবারে ইন্টারনাল। আর টেন্ডারে কোন অনিয়ম হয়নি। এ ব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী পিয়ুস চন্দ্র দে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। পরে সুনেছি পাতারহাট গালস স্কুল বেঞ্চ গ্রহন করেনি। তারা এখানে ৬ ফুট বেঞ্চ না হওয়ায় গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী আমাকে জানিয়েছেন, তারা সিডিউল অনুযায়ী বেঞ্চগুলো তৈরি করেছেন। তবে এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত করার কোন খবর আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি খোজঁ নিয়ে দেখছি।
Leave a Reply